এক কথায় বলতে গেলে ক্লাউড কম্পিউটিং হল কম্পিউটারের রিসোর্স গুলো যেমন হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার এর সার্ভিস গুলো নেটওয়ার্ক এর মাধ্যমে প্রদান করা।
বর্তমানের অধিকাংশ ক্লাউড আসলে খুব বড় আকারের ডেটা সেন্টার, যেখানে হাজার হাজার সার্ভার সাজানো থাকে, লাখ লাখ ডলার খরচ করে তাদের ঠান্ডা রাখতে হয়। কিন্তু এই হাজার হাজার সার্ভার দিয়ে অজস্র ক্লায়েন্টের জটিল সব সমস্যার সমাধান অনেক সহজে করা চলে।
উদাহরণ :
ধরুন আপনার কোম্পানির ওয়েবসাইট বানাচ্ছেন, তাতে একটা ব্লগ চালাবেন। ব্লগের অধিকাংশ ব্লগার ও পাঠক পশ্চিমবঙের। ফলে পশ্চিমবঙের সময় সকাল ৯টা হতে রাত ১২টা পর্যন্ত ব্লগে লোকজন থাকে, তার মধ্যএ সন্ধ্যা ৮টা হতে ১১টা পর্যন্ত খুব বেশি লোক, এতোই বেশি ভিজিটর যে আপনার সার্ভারে খুব চাপ পড়ে, লোড কমাতে ৩টে সার্ভার একসাথে চালাতে হয় সেসময়। কিন্তু রাত ১২ টো হতে সকাল ৯টা পর্যন্ত লোড একেবারেই কম। তখন ১টা সার্ভারেই কাজ হয়ে যায়।
আপনি তাহলে কী করবেন? দুইটি অপশন -
(১) ৩টা সার্ভার ভাড়া করেন দিনরাত ২৪ ঘণ্টার জন্য, অথবা
(২) যখন ভিজিটর বেশি, তখন ৩টা ভাড়া নেন, যখন ইউজার কম, তখন ১টা সার্ভার চালু রাখেন।
এইভাবে ভাড়া নিতে পারলে কিন্তু আপনার খরচ বেশ কমে যাচ্ছে, যখন আপনার দরকার নেই, তখন খামোখা পয়সা কেনো দেবেন? কাজেই আপনার লাভে লাভ!
উল্টা দিকে সার্ভার ভাড়া দেয়া কোম্পানিরও সুবিধা আছে। আপনি যে সময় ১টা সার্ভার ব্যবহার করছেন, ঐ সময়ে বাকি সার্ভারগুলা অন্য কাউকে ভাড়া দিতে পারছে। তাদের সিস্টেম বসে থাকছেনা অলসভাবে কখনোই।
এই যে “এখানে সুলভে সার্ভার ভাড়া দেয়া হয়”, এই আইডিয়াটাই ক্লাউড কম্পিউটিং এর মূলমন্ত্র।
ক্লাউড কম্পিউটিং মূলত ৪ ধরনের হয়ে থাকে। যেমনঃ
- Public cloud: Public cloud হল এমন এক ধরনের ক্লাউড সার্ভিস যা সাধারন জনগন ব্যবহার করতে পারবে।
- Hybrid cloud: Private cloud হল যেটা শুধু কোন নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানের জনগন ব্যবহার করতে পারবে।
- Private cloud: এটা পাবলিক এবং প্রাইভেট দুইটার সংমিশ্রণে তৈরি।
- Community cloud: এটা একাধিক প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করতে পারবে।
ক্লাউড কম্পিউটিং বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। যেমনঃ
- Infrastructure as a service (IaaS)
- Platform as a service (PaaS)
- Software as a service (SaaS)
- Storage as a service (STaaS)
- Security as a service (SECaaS)
- Data as a service (DaaS)
- Test environment as a service (TEaaS)
- Desktop as a service (DaaS)
- API as a service (APIaaS)
কীভাবে আমরা Cloud ব্যবহার করে Data store করতে পারি:
- ·
Internet connection আছে এরকম যেকোনো computer থেকে log in করতে হবে।
- ·
login id না থাকলে প্রথমে user name এবং password দিয়ে একটা account create করতে হবে।
- ·
Cloud based appটি download করতে হবে। যেমন: Copy, SkyDrive, DropBox, Google Drive ইত্যাদি
- ·
File save করার জন্যে file টি app এর ভিতরে রাখতে হবে internet connection থাকলে file টি সাথে সাথে sync হয়ে যাবে।
- ·
তখন প্রয়োজনীয় file টি যেকোনো ডিভাইস ( computer, mobile , tablet ) থেকে ব্যবহার করা যাবে।
ক্লাউড কম্পিউটিং এর কিছু সুবিধাঃ

- o কম খরচঃ যেহেতু এতে আলাদা কোন সফটওয়্যার কেনার প্রয়োজন হয় না বা কোন হার্ডওয়্যার এর প্রয়োজন হয় না। তাই স্বাভাবিক ভাবে খরচ কম হবেই।
- o সহজে ব্যবহারঃ ক্লাউড কম্পিউটিং এর কাজ গুলো যেকোনো স্থানে বসেই
মোবাইলের মাধ্যমে কন্ট্রোল করা যায় তাই এটা সহজে ব্যবহার যোগ্য।
- o অটো সফটওয়্যার আপডেটঃ ক্লাউড কম্পিউটিং এর সফটওয়্যার গুলো আপনার আপডেট
করার প্রয়োজন নেই। এগুলো অটো ভাবে আপডেট হয়ে থাকে। তাই আলাদা ভাবে এটা মেইনটেন্স
এর খরচ লাগে না।
- o যতটুকু ব্যবহার ততটুকু খরচঃ ক্লাউড কম্পিউটিং এ আপনি যত টুকু ব্যবহার করবেন শুধু
মাত্র ততটুকুর জন্য পয়সা আপনাকে গুনতে হবে। যেটা কিনা ডেস্কটপ কম্পিউটিং এ সম্ভব না।
- o
ডকুমেন্ট কন্ট্রোলঃ মনে করুন কোন একটা অফিসে যদি ক্লাউড কম্পিউটিং না
ব্যবহার করে তবে সেই অফিসের ডকুমেন্ট সমূহ কন্ট্রোল করতে বা এক স্থান থেকে অন্য
স্থানে নেবার জন্য আলাদা লোকের প্রয়োজন হবে কিন্তু ক্লাউড কম্পিউটিং এ সেই ধরনের
কোন সমস্যা নেই। অতিরিক্ত লোক ছারাই সকল ডকুমেন্ট কন্ট্রোল করা যায়।
- o
সম্পূর্ণ সিকিউরঃ ক্লাউড কম্পিউটিং সম্পূর্ণ সিকিউর কারন এতে আপনার
ডাটা হারানোর বা নষ্ট হবার কোন চান্স থাকে না। ল্যাপটপ বা কম্পিউটার হারিয়ে যায়।
হার্ডডিস্ক নষ্ট হয়ে যায় ইত্যাদি সমস্যা থেকে ক্লাউড কম্পিউটিং সম্পূর্ণ মুক্ত।
অসুবিধাঃ
- খুব দ্রুত গতির ইন্টারনেট এর প্রয়োজন হয়।
- ট্যেকনিক্যাল প্রবলেম হতে পারে।
ক্লাউড
কম্পিউটিং
এর
কয়েকটি
জনপ্রিয়
অ্যাপ্লিকেশন
এবং
সার্ভিস
সম্পর্কে
আলোচনা
করা
হলঃ
- Outright
- Outright হল একটি ফাইনান্স অ্যাপ্লিকেশন। এটা ছোট খাট বিজনেসের আকাউন্ট এর কাজে ব্যবহার করা হয়। বিজনেসের প্রফিট, লস, আয়, ব্যয় ইত্যাদির খরচ খুব সহজে করা যায়।
- Google Apps
- গুগল অ্যাপস অনেক সুবিধা দেয় যেমনঃ ডকুমেন্ট তরি করা, স্প্রেডশিড তৈরি, স্লাইড শো তৈরি, ক্যালেন্ডার মেইনটেন্স, পার্সোনাল ইমেইল ইত্যাদি তৈরি করার সুবিধা দেয়।
- Evernote
- প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন নোট সমূহ খুব সহজে কন্ট্রোল করা, ব্যবহার করা, যেকোনো স্থানে যেই নোট সমূহ ব্যবহার করাতে Evernote খুবই উপকারি।
- Quickbooks
- Quickbooks
এক ধরনের একাউন্ট সার্ভিস। এর মাধ্যমে ক্যাশ নিয়ন্ত্রন করা, বাজেট তৈরি, বিজনেস রিপোর্ট তৈরি ইত্যাদির কাজে খুব ভাল সাপোর্ট দেয়।
- Moo
- এর মাধ্যমে খুব সহজে সুন্দর সুন্দর বিজনেস কার্ড, পোস্ট কার্ড, মিনি কার্ড ইত্যাদি তৈরি করা যায়। এমনকি এরা প্রিন্টিং এর সার্ভিসও দিয়ে থাকে।
- Toggl
- এটি একটি টাইম ট্র্যাকিং অ্যাপলিকেশন। মূলত প্রোজেক্ট কন্ট্রোল এবং টাইমিং এর জন্য এটা ব্যবহার করা হয়। প্রোজেক্ট তৈরিতে কত সময় লাগলো, কোন খাতে কতটুকু সময় সকল হিসাব এর মাধ্যমে জানা যায়।
- Box.net
- Box.net খুবই চমৎকার একটি সার্ভিস। এটা যেকোনো ধরনের ডিভাইস দিয়ে কন্ট্রোল করা যায়। এতে রাখা যেকোনো ফরমেটের ফাইল যেকোনো স্থানে বসে দেখা যায় বা ব্যবহার করা যায়।
- Skype
- Skype কম্পিউটার কে ফোনে রূপান্তর করে ফেলেছে। বিশ্বের যেকোনো স্থান থেকে কম্পিউটার এর মাধ্যমে কথা বলা, ভিডিও চ্যাট করা ইত্যাদির সুবিধা দিচ্ছে।
- Mozy
- অনালাইনে ব্যাকআপ রাখার জন্য খুবই জনপ্রিয় অ্যাপ। টাকার বিনিময়ে আপনি আপনার ফাইলে ব্যাকআপ রাখতে পারবেন এতে।
- DropBox
- অনেক দরকারি একটি সার্ভিস। ভার্চুয়াল হার্ডডিস্কও বলতে পারেন। মানে আপনি যেকোনো ধরনের ফাইল রাখতে পারবেন এবং সেটা যেকোনো পিসি থেকে কন্ট্রোল করতে পারবেন খুব সহজে। অন্যের সাথে শেয়ার করতে পারবেন।
© Tech News in Bengali 2016 - 2020